জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
প্রতিবেশী ভুমিখেকো চক্রের হামলা ও আইন লঙ্ঘন করে ভূমি জবর দখল প্রচেষ্টার ঘটনায় থানা পুলিশ অসহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কর্মকলাপতি মাধবপুর গ্রামের মরহুম আব্দুল জলিলের ছেলে মো. আল আমিন। গতকাল শনিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ লোকজন আদালতের দেওয়া ১৪৪ ধারা নোটিশ লঙ্ঘন করে তার পরিবারের উপর হামলা ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ যথাযথ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করেন্্্।িলিখিত বক্তব্যে আল আমিন উল্লেখ করেন, বিশ্বনাথ উপজেলার কর্মকলাপতি মাধবপুর গ্রামের ৩০ নং কর্মকলাপতি মৌজার মাধবপুর অংশের ছাপা ১৫১ দাগের উপর তার বাড়ি। দীর্ঘ দিন ওই বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করছেন। তাদের মালিকানাধীন বাড়ির পাশে ৬ শতাংশ ভুমি রয়েছে। ওই জায়গা দখল নিতে প্রতিবেশী আব্দুল মালিক ও তার স্বজনরা মরিয়া হয়ে উঠে। তাদের অনধিকার ও অবৈধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সিলেটের সহকারী জজ বিশ্বনাথ আদালতে স্বত্বমোকদ্দমা ২৫/২০১৪ করেন আল আমিন। আদালত আব্দুল মালিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
এ অবস্থায় আদালতের স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করে গত বছরের ডিসেম্বরে ওই জায়গা দখলের চেষ্টা করেন আব্দুল মালিক ও তার লোকজন। এ ঘটনায় আল আমিনের ভাই মো. শাহজাহান মিয়া বাদি হয়ে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এ ঘটনায় থানা পুলিশ শান্তি রক্ষার্থে উভয়কে সতর্কীকরণ নোটিশ দেয়। কিন্তু জবর দখলের অপচেষ্টার ধারাবাহিকতায় আব্দুল মালিকের লোকজন গত ১৭ জানুয়ারি রাতের আধারে তাদের বাড়ির বাউন্ডারী দেওয়াল ভেঙ্গে ক্ষতি সাধন করে ও পরিবারের সবাইকে প্রাণনাশ ও গুম করার হুমকি দেয়। এঘটনায় মো. শাহজাহান বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা (নং-১৫(১)১৫) করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ওই ঘটনায় মামলা হলেও অজ্ঞাতকারণে হামলাকারীদের গ্রেফতার না করায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তিনি তার পরিবারের জানমাল রক্ষার্থে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় বিবিধ মামলা (নং-০৪/১৫) করেন। কিন্ত প্রতিপক্ষ আব্দুল মালিকরা আদালতের ১৪৪ ধারার নোটিশ লংঘন করে গত ৭ মে তার ঘর ও ভূমিতে সশস্ত্র হামলা চালায়। প্রতিপক্ষ বাড়িতে ঢুকে পরিবারের লোকজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে টাকা পয়সা লুটে নেয়। এছাড়া পরিবারের নারী সদস্যদের টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে দুই নারীসহ পরিবারের তিনজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হামলায় আল আমিনের মা মায়ারুন বেগম, বোন নাজমা বেগম ও ভাই শাহজাহান মিয়া গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ৭ মে আব্দুল মালিকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় মামলা করেন আল আমিন। প্রথমে মামলা নিতে টালবাহানা করে পুলিশ। পরে মামলা নিলেও অজ্ঞাত কারণে আইনের যথাযথ ধারায় (দঃবিঃ ৩২৫,৩২৬ ও ৩৫৪) মামলাটি রেকর্ড করেনি। পুলিশ ৩২৪ (সিম্পল জখমের) ধারায় মামলা রেকর্ড করে। আর এ কারণেই মামলার প্রধান আসামী আব্দুল মালিকসহ এজাহারভুক্ত ৪ আসামী আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে তাদেরকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ ও হত্যা গুম করার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশকে তাগিদ দিলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। পুলিশের কাছে কোন সহযোগিতা না পেয়ে গত ১০ মে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে ও ১১ মে সিলেটের পুলিশ সুপার, ডিআইজি, আইজিপিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে পৃথক আবেদন করেন আল আমিন।
লিখিত বক্তব্যে আল আমিন অভিযোগ করেন, এজাহারে মাথায় গুরুতর গভীরতা কাটা জখম, হাতের হাড়ভাঙ্গা জখম ও শ্লীলতাহানীর বর্ণনা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ এজাহার অনুযায়ী মামলা রেকর্ড করেনি। সংবাদ সম্মেলনে আল আমিন জানমাল রক্ষায় ভুমিখেকো আব্দুল মালিক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম রাজু, মো. জয়নাল মিয়া, মো. জাকুর আলী, মো. আনোয়ার আলী, মো. আব্দুর রব, মো.আলকাছ আলী, মো. ছমরু মিয়া প্রমুখ।
0 comments:
Post a Comment