ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন ছাত্র আব্দুল কাদেরকে নির্যাতন করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের মামলায় খিলগাঁও থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিনের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ রবিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবির রাজের আদালত এ রায় দেন।
এ মামলায় জামিনে থাকলেও রায় ঘোষণার সময় অসুস্থ মর্মে সময় চেয়ে আবেদন করেন হেলাল উদ্দিন। বিচারক সময় আবেদন না মঞ্জুর করে পলাতক বিবেচনা করে এ রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৬ জুলাই খালার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসার পথে দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সাদা পোশাকধারী পুলিশ কাদেরকে মারধর করতে থাকে।
এ সময় তিনি বলেন, "আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।’ এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।" থানার ওসির কক্ষে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করার লক্ষ্যে তাকে মারধর করা হয়।
এক পর্যায়ে তার কাছে কোনো তথ্য না পেয়ে টেবিলে থাকা চাপাতি হাতে নিয়ে ‘দেখি তো চাপাতিতে ধার আছে কি না’ বলে ওসি কাদেরের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের পেছনভাগের মাংসপেশিতে কোপ দিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করলে রক্তে পুরো কক্ষ ভিজে যায়। পরবর্তী সময়ে ওসি হেলাল তাকে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখান।
তিনটি মামলায়ই তদন্ত শেষে নির্দোষ প্রমাণিত হলে কাদেরকে অব্যাহতি দেন আদালত। এ খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের পর হাইকোর্ট ওসি হেলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ও আইন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আবদুল কাদের ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি ওসি হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ২৬ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবু সাঈদ আকন্দ আসামি হেলালকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন একই আদালত।
কাদেরের পক্ষে আদালতে মামলা পরিচালনা করেছেন অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম, মোহাম্মদ গাফফার হোসেন ও শুভ্র সিনহা রায়। বর্তমানে আবদুল কাদের বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারে সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে কমর্রত আছেন।
0 comments:
Post a Comment